বাংলার আয়না

কাশ্মীরের জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘকে ভূমিকা নিতে হবে: গোলটেবিলে বক্তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক
কাশ্মীরের জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করার আহবান জানিয়েছেন দেশের বিশিষ্টজনরা।
গতকাল সাউথ এশিয়ান ইয়ুথ রিসার্চ সেন্টারের উদ্যোগে বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে ‘কাশ্মীর ইস্যু এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা’ শীর্ষক একটি গোলটেবিল আলোচনা সভায় তারা এ আহবান জানান। আয়োজক সংস্থার গবেষণা পরিচালক হুসাইন মো: ইসরাফিলের সভাপতিত্বে এতে আলোচনা করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. রুহুল আমিন, সিনিয়র সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মোস্তফা কামাল মজুমদার, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের প্রমুখ।

অধ্যাপক ড. রুহুল আমিন ভারতকে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় গণতন্ত্র চর্চার আহ্বান জানানিয়ে বলেন, আর্টিকেল ৩৭০ পুনঃপ্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে ভারতকে কাশ্মীরি জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। হিন্দুত্ববাদী পলিসির মাধ্যমে কাশ্মীর হতে পারে আগামীর ইসরাইল। ফিলিস্তিনের ভাগ্য বরণ করতে হতে পারে কাশ্মিরিদের। ৩৭০ বাতিল করার মধ্য দিয়ে সকল ভারতীয় কাশ্মীরে জমি কিনতে পারবে। এই নীতির কারণে অদূর ভবিষ্যতে নিজ ভূমে পরবাস হতে পারে কাশ্মিরের মুসলিম জনতা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় শুধু পাকিস্তান ও ভারতকে সংযত থাকার অনুরোধ করে, কিন্তু কাশ্মীরের প্রকৃত সমস্যা সমাধানের জন্য কেউ কাজ করে না। দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতিশীলতা রক্ষায় সংঘাতমুক্ত কাশ্মীর প্রতিষ্ঠা এবং কাশ্মীরের জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জাতিসংঘকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।

মোস্তফা কামাল মজুমদার বলেন, কাশ্মীর ভারত ও পাকিস্তানের উভয়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কাশ্মীর নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার যে সংকট তা শুধু এই দুই দেশকেই ভোগায় না বরঞ্চ বাংলাদেশসহ এই অঞ্চল তথা সমগ্র বিশ্বের জন্যই এটি হুমকিস্বরূপ। তিনি কাশ্মীরের মানবাধিকার লংঘন বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের উপর গুরুত্বারোপ করেন। এক্ষেত্রে সার্ককে কার্যকরী করার আহবান জানান তিনি। কাশ্মীরিদের ন্যায্য অধিকারের প্রতি সমর্থন জানিয়ে তিনি আরো বলেন, আর্টিকেল ৩৭০ পুনঃপ্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে ভারতকে কাশ্মীরি জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। কাশ্মীরি জনগণের প্রতি বঙ্গবন্ধুর যে সমর্থন তা মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, বাংলাদেশ সরকার এবং জনগণের উচিৎ কাশ্মীরিদের পাশে দাঁড়ানো।
কাজী আবুল খায়ের কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামী জনগোষ্ঠীর পাশে দেশের সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে সহায়তা করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, জাতিসংঘের মাধ্যমে গণভোট আয়োজনের মধ্য দিয়ে কাশ্মীরীদের মতামত অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিৎ। মানবাধিকার সংরক্ষন এবং দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতিশীল শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য দ্রæত কাশ্মীর সমস্যা সমাধানের আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, কাশ্মিরে যুব সমাজ বর্তমানে চরম দুর্দশার মধ্যে রয়েছে। সশস্ত্র বাহিনীর তাদের উপর নির্মম অত্যাচার চালাচ্ছে।
হুসাইন মো: ইসরাফিল বলেন, কাশ্মীরের সংকটের ভুক্তভোগী আমরা সবাই। কাশ্মীরের সমস্যা সমাধানে আজকের এই সংহতি দিবসে আমাদের সবাইকেই একত্রিত হওয়া উচিত। কারফিউ, অবৈধ আটক, খুন, সুপরিকল্পিত হত্যা, অবরোধ, বসতবাড়িতে আগুন, নির্যাতন, গুম, ধর্ষন, মুসলিম নারীদের উপর নির্যাতন এবং নকল এনকাউন্টারের মাধ্যমে হত্যা কাশ্মীরের নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে উঠেছে। এসব মৃত্যু এবং নির্যাতন বন্ধের জন্য তিনি আন্তর্জাতিক সুশীল সমাজ এবং জাতিসংঘের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন। কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামী জনগোষ্ঠীর পাশে দেশের সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে সহায়তা করার আহ্বান জানান তিনি।

Scroll to Top