বাংলার আয়না

জাতীয় কবি কাজী নজরুলের ১২৩ তম জন্মবাষিকী

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক
আজ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৩তম জন্মবাষিকী। তিনি বাংলা সাহিত্যাকাশে ধ্রুবতারা। তার কবিতা, গান, উপন্যাস ও গল্পে বাঙালি জেনেছে বীরত্বের ভাষা, দ্রোহের মন্ত্র। বাঙালির সব আবেগ-অনুভূতিতে জড়িয়ে আছেন চিরবিদ্রোহী কবি। এবার জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী উদযাপনের প্রতিপাদ্য-‘বিদ্রোহীর শতবর্ষ।’ নজরুলজয়ন্তী উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

কাজী নজরুল ইসলাম ১৮৯৯ সালের ২৫ মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, সংগীতজ্ঞ, সাংবাদিক, সম্পাদক, রাজনীতিবিদ ও দার্শনিক। তিনি প্রায় তিন হাজার গান রচনা ও বেশির ভাগই সুরারোপ করেছেন, যেগুলো নজরুলগীতি নামে পরিচিত। তার ডাকনাম দুখু মিয়া। তিনি মাত্র নয় বছর বয়সে ১৯০৮ সালে পিতৃহারা হন।

অল্প বয়সেই লোকসংগীত রচনা শুরু করেন। ১৯১৭ সালের শেষভাগ থেকে ১৯২০ সাল পর্যন্ত তিনি ৪৯ বেঙ্গল রেজিমেন্টের সাধারণ সৈনিক করপোরাল থেকে কোয়ার্টার মাস্টার হাবিলদারের পদে উন্নীত হন। যুদ্ধ শেষে কলকাতায় এসে সাহিত্য ও সাংবাদিকতা শুরু করেন।

১৯২১ সালের অক্টোবরে তিনি শান্তিনিকেতনে গিয়ে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ১৯২১ সালের মাঝামাঝি কুমিল্লার প্রমীলা দেবীর সঙ্গে প্রণয় থেকে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। ১৯২২ সালে ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটির মধ্য দিয়ে সারা ভারতে সাড়া ফেলেন। একই বছর ২৩ নভেম্ভর তার যুগবাণী প্রবন্ধগ্রন্থ বাজেয়াপ্ত করা হয় এবং একইদিনে তাকে কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করে কলকাতায় নেয়া হয়। ১৯২৩ সালের ৭ জানুয়ারি নজরুল আত্মপক্ষ সমর্থন করে চিফ প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট সুইনহোর আদালতে জবানবন্দি দেন। তার এ জবানবন্দি বাংলা সাহিত্যে ‘রাজবন্দির জবানবন্দি’ নামে বিশেষ সাহিত্যিক মর্যাদা লাভ করেছে।

কাজী নজরুল ইসলাম মধ্যবয়সে পিকস্ ডিজিজে আক্রান্ত হন ও বাক্শক্তি হারান। এর ফলে আমৃত্যু তাকে সাহিত্যকর্ম থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগে ১৯৭২ সালে তাকে বাংলাদেশে আনা হয়। ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট তিনি ইন্তেকাল করেন।

কর্মসূচি : এ বছর জন্মবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান হবে নজরুল স্মৃতিবিজড়িত কুমিল্লায়। কুমিল্লার বীরচন্দ্র গণপাঠাগার ও নগর মিলনায়তন প্রাঙ্গণে আজ বেলা ১১টায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি।

ঢাকাসহ জাতীয় কবির স্মৃতিবিজড়িত ময়মনসিংহের ত্রিশাল, কুমিল্লার দৌলতপুর, মানিকগঞ্জের তেওতা, চুয়াডাঙ্গার কার্পাসডাঙ্গা এবং চট্টগ্রামে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ও স্থানীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় জাতীয় কবির ১২৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হবে।

ঢাকাসহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনাসভা, রচনা ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে। বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসগুলো দিবসটি উদযাপন করবে। জাতীয় পর্যায়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচারসহ অন্য অনুষ্ঠানমালা বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার, বেসরকারি বেতার ও টেলিভিশন চ্যানেল সম্প্রচার করবে।

Scroll to Top